বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:তাঁর অপরাধ, পশ্চিমবাংলায় তিনি বিজেপি করেন। সেইজন্য সোমবার ‘কমপ্লিট লকডাউনের’ দিনেই তাঁকে গুলি করে খুন করার চেষ্টা করল দুষ্কৃতীরা। আক্রান্ত মহিলার নাম রাধারানি নস্কর। তিনি বিজেপির স্থানীয় বুথ কমিটির সহ–সভাপতি এবং মহিলা মোর্চার কোষাধ্যক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের রঘুনাথপুরে। আক্রান্ত বিজেপি নেত্রী বর্তমানে কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন, বিজেপি করার অপরাধেই তাঁকে খুন করার চেষ্টা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে বিজেপি জানিয়েছে, সেই তদন্ত নির্বাচনের আগে শেষ হবে না, অথবা ওই ঘটনায় বিজেপি কর্মীদেরই ফাঁসিয়ে দিয়ে গ্রেফতার করা হবে। জানা গিয়েছে, আক্রান্ত রাধারানি নস্করের স্বামী অরুণ নস্কর বিজেপির বুথ কমিটির সভাপতি। সোমবার সকালে অরুণবাবুর খোঁজেই তাঁর বাড়িতে চড়াও হয় সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। কিন্তু অরুণবাবু তখন বাড়িতে ছিলেন না। তাঁকে না পেয়ে বাড়িঘরে ভাঙচুর শুরু করে তারা। তখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে প্রতিবাদ করেন রাধারানি দেবী।
তখন তাঁকে হাতের কাছে পেয়ে মারধর শুরু করে। বিজেপি ছাড়ার জন্য হুমকিও দেয়। তিনি পালাতে গেলে দুষ্কৃতীরা তাঁকে গুলি করে। গুলি লাগে তাঁর মাথার ঠিক পেছনে। গুলির শব্দে স্থানীয়রা ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রাই তাঁকে সেখানকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কলকাতার একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ঘটনার পরই ওই অঞ্চলে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয়দের অনেকেই স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল। রাজ্যে মহিলাদের কোনও নিরাপত্তা নেই বলেও তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন।
উত্তেজনার খবর পেয়ে সেখানে যায় পুলিশ। বিষ্ণুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত শেষ হলেই বলা যাবে কে বা কারা এবং কেন গুলি চালিয়েছে। পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ডিএসপি জীবনেশ রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছেন।